ঢাকা শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫

কড়াইল বস্তি আগুনে ধ্বংস: নিঃস্ব মানুষদের আহাজারি

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৬ নভেম্বর, ২০২৫, ০৫:১৯ বিকাল

ছবি: সংগ্রহীত

রাজধানীর বনানীর কড়াইল বস্তি ভয়াবহ আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে, যার কারণে এলাকার বাসিন্দারা নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। আগুনের চূড়ান্ত তাণ্ডবে কেউ খোলা মাঠে আশ্রয় নিয়েছেন, কেউ বা ধ্বংসস্তূপের পাশে দাঁড়িয়ে হতবাক হয়ে দেখছেন, আবার কেউ ধ্বংসস্তূপে খুঁজছেন বেঁচে থাকার শেষ আশা। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য স্থানীয়রা খাবার ও পানি সরবরাহ করছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা মুরশিদ মিয়া জানান, মঙ্গলবার মাগরিবের নামাজের জন্য মসজিদে গিয়ে ওজু করছিলেন। সেই সময় তিনি আগুনের শব্দ শুনে ছুটে এসে দেখেন, তার ছেলে আল আমিনের কাপড়ের দোকানসহ আশপাশে আগুন লেগেছে। দ্রুত নিরাপদ স্থানে চলে গেছেন তারা।

প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, আগুনের সূত্রপাত হয়েছে গুদারাঘাটের কবরস্থান রোডের মিন্টু মিয়ার বাড়ির রান্নাঘরের গ্যাস সিলিন্ডারের পাইপ ফেটে। এরপর আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের দোকান এবং ঘরগুলোতে। স্থানীয় কাপড় ব্যবসায়ী মো. রাসেল জানিয়েছেন, আগুন লাগার সময় তিনি দোকানে ছিলেন, পরে দ্রুত নিরাপদ স্থানে চলে যান।

ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মধ্যে মিন্টু মিয়ার পরিবারেরও অবস্থার অবনতি হয়েছে। তার মেয়ে শিউলি জানান, মা নিখোঁজ, বাবা তাকে খুঁজতে ব্যস্ত। আগুনের আগে তাদের ২০টি ঘর ছিল, এর মধ্যে দুটিতে তারা থাকতেন। হঠাৎ আগুন লাগায় শিউলি তার ছোট দুই ভাগনিকে নিয়ে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যান।

গাড়ি চালক মি. গিয়াস উদ্দিন জানান, তার কড়াইল বস্তিতে ১১টি টিনসেড ঘর এবং একটি ফার্মেসির দোকান ছিল। গত ১৯৯৯ সাল থেকে তিনি এখানে বসবাস করছিলেন। আগুনে সব সম্পদ ধ্বংস হয়েছে। পুনঃনির্মাণের জন্য অন্তত ২০ লাখ টাকা প্রয়োজন। তিনি বলেন, এর আগে ২০০৪ ও ২০১৭ সালে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, এবার আরও বড় ক্ষতি হয়েছে।

বস্তির অন্য বাসিন্দা মিনা আক্তার জানান, তার ঘর ও সব মূল্যবান জিনিসপত্র আগুনে পুড়ে গেছে। তার ১১ বছর বয়সী সন্তান বর্তমানে এক মাদ্রাসায় পড়ছে। ৩২০০ টাকার ভাড়া দেওয়ার রুমে থাকা সামান্য জিনিসও আগুনে শেষ হয়ে গেছে।

ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকাল ৫টা ২২ মিনিটে আগুনের খবর পেয়ে তারা ১৯টি ইউনিট পাঠায়। পাঁচ ঘণ্টা পর রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় পুরোপুরি আগুন নেভানোর কথা জানানো হয়। আগুনে অন্তত ১,৫০০টি ঘর পুড়ে গেছে এবং বহু মানুষ সম্পূর্ণ নিঃস্ব হয়ে পড়েছে।

Link copied!