ঢাকা শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫

সুন্দর ও স্মরণীয় নির্বাচন আয়োজনের অঙ্গীকার প্রধান উপদেষ্টার

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৩:৪৮ দুপুর

ছবি: সংগ্রহীত

গণঅভ্যুত্থানের পর অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনকে দেশ পুনর্গঠনের বিরল সুযোগ হিসেবে বর্ণনা করে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এই নির্বাচনকে এমনভাবে আয়োজন করতে হবে যাতে এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি স্মরণীয় মুহূর্ত হয়ে থাকে। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশের সব উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের সঙ্গে নির্বাচন প্রস্তুতি বিষয়ে নির্দেশনা প্রদানকালে তিনি এই মন্তব্য করেন। সভায় অনলাইনে যুক্ত ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক থেকে শুরু করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

ইউএনওদের উদ্দেশ্যে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ইতিহাস একবারই বড় সুযোগ দেয় এবং এই প্রজন্ম সেই সুযোগ পেয়েছে। তা সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারলে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে উঠবে, আর ব্যর্থতা হলে জাতি আবারও পিছিয়ে যাবে। তিনি বলেন, পূর্ববর্তী সরকারের সময় অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলো জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি; যেকোনো বিবেকবান মানুষই বুঝতে পেরেছে সেগুলো প্রকৃত নির্বাচন ছিল না।

তিনি আরও জানান, এবারকার নির্বাচন প্রশাসনের কাছে সাধারণ দায়িত্ব নয়; বরং এটি একটি যুগান্তকারী দায়িত্ব। তা যথাযথভাবে সম্পন্ন করতে পারলে এই নির্বাচন দেশের মানুষের জন্যও ইতিহাস হয়ে থাকবে। ইউএনওদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দায়িত্বশীলভাবে কাজ করতে পারলেই সরকারের সার্বিক দায়িত্বপালন সফল হবে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, একদিকে জাতীয় নির্বাচন আগামী পাঁচ বছরের রাষ্ট্র পরিচালনার ভিত্তি নির্ধারণ করবে, অন্যদিকে গণভোটের সিদ্ধান্ত দীর্ঘ এক শতক ধরে দেশের ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা স্থির করে দেবে। তার মতে, গণভোটের মাধ্যমে দেশকে স্থায়ীভাবে পরিবর্তনের সুযোগ তৈরি হয়েছে, যা নতুন বাংলাদেশের ভিত্তি নির্মাণে বড় ভূমিকা রাখবে।

সদ্য দায়িত্ব পাওয়া ইউএনওদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ, উৎসবমুখর এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করাই তাদের প্রধান কর্তব্য। তিনি নির্দেশ দেন—প্রতিটি ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন, স্থানীয়দের সঙ্গে আলোচনা এবং সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করেই প্রস্তুতি নিতে হবে। গণভোটে ভোটারদের সচেতনতা বাড়াতে হবে যাতে তারা ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ সিদ্ধান্ত স্পষ্ট করে ভোটকেন্দ্রে আসেন।

তিনি উদাহরণ টেনে বলেন, যেমন দক্ষ ধাত্রী ভালো শিশুর জন্ম নিশ্চিত করে, তেমনি দক্ষ কর্মকর্তা ভালো নির্বাচন নিশ্চিত করেন। পাশাপাশি তিনি নির্দেশনা দেন—যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় কর্মকর্তাদের সৃজনশীল হতে হবে এবং অপতথ্য ও গুজব প্রতিরোধে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।

নারীদের ভোটকেন্দ্রে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাকেও তিনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন। তিনি জানান, খুব শিগগিরই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে, তাই কোন কাজ কখন এবং কীভাবে করতে হবে—এখন থেকেই তার সুস্পষ্ট পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রেস সচিব এবং জনপ্রশাসন সচিবসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Link copied!